Awareness, ডাইনি প্রথা, Flash Fiction, Independent Woman, Life, Short Story, Social Issues, Witch, Woman

ডাইনি

একটা ভাঙাচোরা মুখ। অনেক গুলো চিড় খাওয়া একটা আয়নার সামনে, মুখটা মাঝেমাঝে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখছে নিজের অসংখ্য প্রতিফলন। ক্রমে দেখতে দেখতে নিজেকে কেমন অপদেবতা বলে মনে হচ্ছে!
গ্রামের লোকেরা যেটা বলে সেটা কি সত্যি! সত্যি সে…
না একবার সে বাঁচতে পেরেছে তাই বলে নিজেকে বারবার বাঁচানো সম্ভব না। তাকে পালাতে হবে, যে করেই হোক।
হঠাৎ তাকে চমকে দিয়ে দরজায় আঘাত পড়লো, ‘এই ডাইনি দরজা খোল! শহর থেকে লেখাপড়া করে, এখন এ গাঁয়ে এসেছিস ছোট ছেলেদের প্রাণ নিতে! তোর জন্যে নিবারণের ছেলে মরেছে ডাইনি, আজ তোকে পুড়িয়ে মারবো! দরজা খোল, নইলে ভেঙে ফেলবো দরজা!’ মেয়েটা কেঁপে কেঁপে উঠছে। দরজায় করাঘাত উত্তরোত্তর বাড়ছে।
-‘কিরে খুলবি দরজা! নাকি ভাঙবো!’
-‘মোড়লমশাই আপনি অনুমতি দিলে ভাঙি।’
শুরু হলো দরজা ভাঙার শব্দ।
এক সময় দরজা ভেঙে গেলো। গোটা গ্রাম ঘরের ভিতর হুড়মুড় করে ঢুকতে গিয়ে, ঘরময় ছড়ানো আয়নার কাচ, ক্ষতবিক্ষত করে দিলো তাদের পা গুলোকে। মেয়েটা পালানোর আগে ভাঙা আয়নার কাচ ছড়িয়ে গিয়েছিলো ঘরময়। পিছনের জানলার শিক উপড়ানো।
-‘পালিয়েছে!’
-‘ডাইনি ধরতে হবে! চল শিগগিরি!’
আহত পায়ে কতক্ষনই বা খোঁজা সম্ভব!

ততক্ষণে মেয়েটি পাড়ি দিয়েছে অনেক দূরে, শহরের দিকে, যেখানে কেউ চেনে না তাকে, কেউ তাকে ডাইনি বলবে না, অকারণে দোষ দেবে না।

অন্তত একজন নারী এমন কলমের টানে ‘ডাইনি’ অপবাদ থেকে বাঁচুক।