Social Issues

পবিত্রস্থান

একটা দরজা। অনেক বড়ো দরজাটা। দরজার উপরে লেখা ‘পবিত্রস্থান’। ভিতরে ঢুকলাম। একটা বড়ো উঠোন। উঠোন পেরোলে কতগুলো বড়ো বড়ো সেক্টর। একটা সেক্টরে বসে আছেন হিন্দু কোনো দেবদেবী। পরের সেক্টরে নামাজ পড়া হচ্ছে। আরেকটি সেক্টর থেকে ভেসে আসছে, ‘বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি’। কোনো সেক্টরে বা দাঁড়িয়ে আছেন প্রভু যীশু। ঐ একই উঠোনে এইরকম আরও অনেক সেক্টর আছে- ভারতবর্ষে যতগুলো ধর্ম আছে ততগুলো সেক্টর। – আমরা তো এই ভারতবর্ষ-ই দেখতে চেয়েছিলাম তাই না?

সেইদিন যেদিন রামজন্মভূমি দখল করেছিলেন বাবর, তুলেছিলেন মসজিদ- সেদিন আদৌ কী আল্লাহ এসেছিলেন সেই মসজিদে? আজ একই ভাবে মসজিদ ভেঙে মন্দির গড়া হলো। কাটা পড়লো অনেকের বাসস্থান- এইভাবেই কি খুশি হন পুরুষোত্তম, প্রজাপ্রিয় শ্রীরাম?

যদিও সরকারের কাজ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, কর্মসংস্থান ইত্যাদি ইত্যাদি দিকে নজরপাত করা। কে বাড়িতে নামাজ পড়বে, পুজো করবে সে তো জনতার ব্যক্তিগত জীবন। আমার স্পিরিচুয়ালিটি কী বলে, কোন ধর্মের নৈতিকতা আমায় আকর্ষণ করে সে তো একান্তই আমার সিদ্ধান্ত। স্ট্যাচু অফ ইউনিটি গড়া হলো, রামমন্দির গড়া হলো। সঙ্গে আমরা বড়ো বড়ো অঙ্কও শিখলাম! তবে তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না। কারণ আমরা মাথা উঁচু করে দেখতে চাই সোনার ঘড়া আর স্ট্যাচু অফ ইউনিটি! ঠিক তার পাশেই বিস্তৃত আছে কতগুলো এঁদো, বস্তিতে ঘেরা গলিপথ। সেই বস্তিতে কোনো শিশু পড়তে বসে, কেউ বা বসে না। কারোর উনুন জ্বলে কারোর বা ভাত জোটে না। হ্যাঁ হ্যাঁ প্রদীপের তলায় ঐ যেখানে অন্ধকার পড়েছে সেই জায়গাটা। কী অন্ধকার না? সত্যিই কিছুই দেখা যায় না!

Leave a comment