Bengali, Flash Fiction, Ghost

রাতের অতিথি

ভয় আর নির্জনতা আঁকড়ে ধরে,
ঝড় জলের রাতে একলা রাস্তায় যানবাহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে মেয়েটা।
অবশেষে সামনে একটা বাইক থামলো। কাঁপা কাঁপা ঠান্ডা হাত উঠলো ড্রাইভারের কাঁধে। হাওয়ার গতিতে বাইক চলছে ভুল রাস্তায়, ‘বাইক থামান!’-উত্তর নেই।
বাইক থামলো। অনেক লোকের ভিড় থেকে ভেসে আসছে কয়েকটা শব্দ,’আবার চাঞ্চল্যকর তথ্য, সেই স্পটেই আজ আবারও একটা এক্সিডেন্ট! আপনারা দেখছেন বয়েস তিরিশের একটি মেয়ে…’
সামনে গিয়ে মৃতদেহটা দেখে আঁতকে উঠলো মেয়েটা।
হঠাৎ কানের কাছে ঠান্ডা ফিসফিসানি, ‘কাল রাতে বাইকে করে আমি ফিরছিলাম, কালকের মৃতদেহটা আমার ছিল, আর আজ আপনার! আগে আমার কাজ ছিল অতিথিকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া, আর এখন আমাদের মতো ‘রাতের অতিথি’-দের তার দেহের কাছে পৌঁছে দিয়ে আসি!’

Ghost, Life, Philosophy

কবর-তলার প্রলাপ

সুবাস ছড়ায় আমার মৃত রজনীগন্ধার মালা,
মনে করি, আমার কবরের ঘুম বুঝি এবার সাঙ্গ হবার পালা।
‘এবার জাতিস্মর হবো!’
আমার এই শুকনো কঙ্কালের কথা কে-ই বা শোনে!
কেবল শুকনো বুকের পিঞ্জর কেঁদে মরে কোনো প্রাণপাখির টানে!

আসুক না কোনো আধুনিক এক সত্ত্বা।
এই শুষ্ক হাড়ের উপর আবার কাশফুলের মতো প্রস্ফুটিত হোক কোমল মাংসল পেশী।
তার ওপর কাঁচা সোনার রঙের চামড়ার বিন্যাস হোক।
বিধাতা এক তুলির টানে বর্ণনা করুক লোচনদ্বয়।
থাকুক সোনালী ঢেউ খেলানো দীর্ঘ চিকুর।
সেই ঢেউয়ের গতিতে ভেসে যাক কয়েকটা মন।
নাই বা হোলাম পঞ্চবটির ভূমিসূতা।
তাতে কি-ই বা এলো গেলো!

দিন কাটে ধোঁয়াটে আলোর মেলায়।
পার্থক্য বুঝি না আমি মানুষ আর না-মানুষের!
মৃত কঙ্কাল আমি ভেসে ফিরি শরীর গড়ার স্বপ্ন নিয়ে।
আর কবর-তলার এই প্রলাপ চাপা পড়ে থাকে কবরের নিচেই।